Loading...
Question View
Loading...
কাশী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর কবিতা
কবিতা
|
বাংলা
|
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাশী
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাশীর গল্প শুনেছিলুম যোগীনদাদার কাছে,
পষ্ট মনে আছে।
আমরা তখন ছিলাম না কেউ, বয়েস তাঁহার সবে
বছর-আষ্টেক হবে।
সঙ্গে ছিলেন খুড়ি,
মোরব্বা বানাবার কাজে ছিল না তাঁর জুড়ি।
দাদা বলেন, আমলকি বেল পেঁপে সে তো আছেই,
এমন কোনো ফল ছিল না এমন কোনো গাছেই
তাঁর হাতে রস জমলে লোকের গোল না ঠেকত--এটাই
ফল হবে কি মেঠাই।
রসিয়ে নিয়ে চালতা যদি মুখে দিতেন গুঁজি
মনে হত বড়োরকম রসগোল্লাই বুঝি।
কাঁঠাল বিচিত্র মোরব্বা যা বানিয়ে দিতেন তিনি
পিঠে ব'লে পৌষমাসে সবাই নিত কিনি।
দাদা বলেন, "মোরব্বাটা হয়তো মিছেমিছিই,
কিন্তু মুখে দিতে যদি, বলতে কাঁঠাল বিচিই।"
মোরব্বাতে ব্যাবসা গেল জ'মে
বেশ কিঞ্চিৎ টাকা জমল ক্রমে।
একদিন এক চোর এসেছে তখন অনেক রাত,
জানলা দিয়ে সাবধানে সে বাড়িয়ে দিল হাত।
খুড়ি তখন চাটনি করতে তেল নিচ্ছেন মেপে,
ধড়াস করে চোরের হাতে জানলা দিলেন চেপে।
চোর বললে, "উহু উহু'; খুড়ি বললেন, "আহা,
বাঁ হাত মাত্র, এইখানেতেই থেকে যাক-না তাহা।'
কেঁদে-কেটে কোনোমতে চোর তো পেল খালাস;
খুড়ি বললেন, "মরবি, যদি এ ব্যাবসা তোর চালাস।'
দাদা বললেন, "চোর পালালো, এখন গল্প থামাই,
ছ'দিন হয়নি ক্ষৌর করা, এবার গিয়ে কামাই।"
আমরা টেনে বসাই; বলি, "গল্প কেন ছাড়বে।"
দাদা বলেন, "রবার নাকি, টানলেই কি বাড়বে।--
কে ফেরাতে পারে তোদের আবদারের এই জোর,
তার চেয়ে যে অনেক সহজ ফেরানো সেই চোর।
আচ্ছা তবে শোন্, সে মাসে গ্রহণ লাগল চাঁদে,
শহর যেন ঘিরল নিবিড় মানুষ বোনা ফাঁদে।
খুড়ি গেছেন স্নান করতে বাড়ির দ্বারের পাশে,
আমার তখন পূর্ণগ্রহণ ভিড়ের রাহুগ্রাসে।
প্রাণটা যখন কণ্ঠাগত, মরছি যখন ডরে,
গুণ্ডা এসে তুলে নিল হঠাৎ কাঁধের 'পরে।
তখন মনে হল, এ তো বিষ্ণুদূতের দয়া,
আর-একটু দেরি হলেই প্রাপ্ত হতেম গয়া।
বিষ্ণুদূতটা ধরল যখন যমদূতের মূর্তি
এক নিমেষেই একেবারেই ঘুচল আমার ফুর্তি।
সাত গলি সে পেরিয়ে শেষে একটা এঁধোঘরে
বসিয়ে আমায় রেখে দিল খড়ের আঁঠির 'পরে।
চৌদ্দ আনা পয়সা আছে পকেট দেখি ঝেড়ে,
কেঁদে কইলাম, "ও পাঁড়েজি, এই নিয়ে দাও ছেড়ে।'
গুণ্ডা বলে, "ওটা নেব, ওটা ভালো দ্রব্যই,
আরো নেব চারটি হাজার নয়শো নিরেনব্বই--
তার উপরে আর দু আনা, খুড়িটা তো মরবে,
টাকার বোঝা বয়ে সে কি বৈতরণী তরবে।
দেয় যদি তো দিক চুকিয়ে, নইলে--' পাকিয়ে চোখ
যে ভঙ্গিটা দেখিয়ে দিলে সেটা মারাত্মক।
এমনসময়, ভাগ্যি ভালো, গুণ্ডাজির এক ভাগ্নি
মূর্তিটা তার রণচণ্ডী, যেন সে রায়বাঘ্নি,
আমার মরণদশার মধ্যে হলেন সমাগত
দাবানলের ঊর্ধ্বে যেন কালো মেঘের মতো।
রাত্তিরে কাল ঘরে আমার উঁকি মারল বুঝি,
যেমনি দেখা অমনি আমি রইনু চক্ষু বাজি।
পরের দিনে পাশের ঘরে, কী গলা তার বাপ,
মামার সঙ্গে ঠাণ্ডা ভাষায় নয় সে বাক্যালাপ।
বলছে, "তোমার মরণ হয় না, কাহার বাছনি ও,
পাপের বোঝা বাড়িয়ো না আর, ঘরে ফেরৎ দিয়ো--
আহা, এমন সোনার টুকরো--' শুনে আগুন মামা;
বিশ্রী রকম গাল দিয়ে কয়, "মিহি সুরটা থামা।'
এ'কেই বলে মিহি সুর কি, আমি ভাবছি শুনে।
দিন তো গেল কোনোমতে কড়ি বর্গা গুনে।
রাত্রি হবে দুপুর, ভাগ্নি ঢুকল ঘরে ধীরে;
চুপি চুপি বললে কানে, "যেতে কি চাস ফিরে।'
লাফিয়ে উঠে কেঁদে বললেম, "যাব যাব যাব।'
ভাগ্নি বললে, "আমার সঙ্গে সিঁড়ি বেয়ে নাবো--
কোথায় তোমার খুড়ির বাসা অগস্ত্যকুণ্ডে কি,
যে ক'রে হোক আজকে রাতেই খুঁজে একবার দেখি;
কালকে মামার হাতে আমার হবেই মুণ্ডপাত।'--
আমি তো, ভাই, বেঁচে গেলেম, ফুরিয়ে গেল রাত।
হেসে বললেম যোগীনদাদার গম্ভীর মুখ দেখে,
ঠিক এমনি গল্প বাবা শুনিয়েছে বই থেকে।
দাদা বললেন, "বিধি যদি চুরি করেন নিজে
পরের গল্প, জানিনে ভাই, আমি করব কী যে।'
: 0
: 0
:
64
Author
Sabyasachi Bairagi
Date
15-10-2025
: 0
: 0
:
60
: 0
: 0
:
130
: 0
: 0
:
122
: 0
: 0
:
63
: 0
: 0
:
77
: 0
: 0
:
122
: 0
: 0
:
64
: 0
: 0
:
118
: 0
: 0
:
92
: 0
: 0
:
147
ডিজিটাল স্কুল কলেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম- এসসিএমএস দেশের সর্বাধুনিক পূর্ণাঙ্গ স্মার্ট স্কুল কলেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এবং আপনার প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্ববাসীর কাছে আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করতে এসসিএমএস পরিবারের একজন গর্বিত সদস্য হোন। বিদ্যার্থীগণ এসসিএমএস এর বিশাল তথ্য ভাণ্ডার থেকে ব্লগ, বড় প্রশ্ন, ছোট প্রশ্ন, বহুনির্বাচনী প্রশ্ন, উপকরণ, ডিজিটাল বই, ইলেক্ট্রনিক্স বই, গান, কবিতা, রচনা, ছড়াসহ বিভিন্ন বিষয়ের অধ্যয়ন করতে পারবে। বিদ্যার্থীগণ এসসিএমএস এর তথ্য ভাণ্ডার ব্যবহার করে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবে সেই প্রত্যাশা এবং শুভকামনা রাখি।
Copyright 2025 School College Management System All Right Reserved.
|
Developed by Sabyasachi Bairagi